ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

‘নির্বাচনে লাখ লাখ অবৈধ ভোট পড়েছে’, জিইয়ে আছে হিলারির সম্ভাবনা

trumpoঅনলাইন ডেস্ক ::

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লাখ লাখ অবৈধ ভোট পড়েছে। এগুলো যদি বাদ দেয়া হয় তাহলে পপুলার ভোটেও নিজেকে বিজয়ী বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনে গ্রিন পার্টির প্রার্থী ছিলেন জিল স্টেইন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে উইসকনসিন রাজ্যের ভোট নতুন করে গণনা করা হচ্ছে। তার এ উদ্যোগে সমর্থন দিয়েছে ডেমোক্রেট দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিস্ময়করভাবে হেরে যাওয়া হিলারি ক্লিনটন টিম। এরই মধ্যে নির্বাচনের যে ফল পাওয়া গেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, ডনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে হিলারি ক্লিনটন প্রায় ২০ লাখ পপুলার ভোট বেশি পেয়েছেন। এর পর পরই জিল স্টেইন নতুন করে ভোট গণনার আবেদন করেন। তিনি আরও দুটি রাজ্য মিশিগান ও পেনসিলভ্যানিয়ায় ভোট গণনার জন্য আবেদন করবেন এমনটি প্রায় নিশ্চিত। এই যখন অবস্থা তখন ডনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে এক টুইট করেছেন। তিনি তাতে লিখেছেন, ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটে ভূমিধস বিজয় করেছি। অধিকন্ত, নির্বাচনে যে লাখ লাখ মানুষ অবৈধ ভোট দিয়েছে তা বাদ দিলে আমিই পপুলার ভোটে বিজয়ী হয়েছি। তার এমন টুইট নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। সিএনএন টেলিভিশন এ বিষয়টি জোর দিয়ে প্রচার করছে। তা ছাড়া বিশ্ব মিডিয়া লুফে নিয়েছে ইস্যুটি। অনলাইন বিবিসি লিখেছে, ফলোআপ টুইটে ট্রাম্প আরও লিখেছেন, নির্বাচনী প্রচারণার সময় আমি ১৫টি রাজ্য সফর করেছি। তার পরিবর্তে আমি যদি শুধু ৩টি বা ৪টি রাজ্যে প্রচারণা চালাতাম তাহলে ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের চেয়ে আমি তথাকথিত পপুলার ভোট সহজেই বেশি পেতাম। এবং আমার জন্য বিজয়ী হওয়া আরও সহজ হতো। আমি আরও বেশি সহজে বিজয়ী হতাম।
কিন্তু তিনি অভিযোগ করেছেন ভার্জিনিয়া, নিউ হ্যাম্পশায়ার ও ক্যালিফোর্নিয়ায় মারাত্মক ভোট জালিয়াতি হয়েছে। এ রাজ্যগুলোতে বিজয়ী হয়েছেন হিলারি ক্লিনটন। কিন্তু ওই ভোট জালিয়াতির খবর প্রকাশ করেনি বলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়াকে দোষারোপ করেছেন। রোববার দিনের শুরুর দিকে তিনি ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী হিলারিকে মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি কিন্তু এরই মধ্যে পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন। ট্রাম্প নির্বাচনের ফল মানবেন না বলে যে মন্তব্য করেছিলেন প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের সময় সে বিষয়ে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছিলেন হিলারি। তিনি ট্রাম্পকে নির্বাচনের ফল মেনে নিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। হিলারিকে এসব কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। এখন উইসকনসিনে ভোট গণনা শুরু হচ্ছে। এখানে অল্প ভোটের ব্যবধানে হিলারিকে পরাজিত করেন ট্রাম্প। মিশিগান ও পেনসিলভ্যানিয়াতেও একই রকম অবস্থা। এ তিনটি রাজ্য ডেমোক্রেটদের ঘাঁটি বলে পরিচিত। নতুন করে সেখানে ভোট গণনায় যদি হিলারি বিজয়ী হন তাহলে ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের হিসাব পাল্টে যাবে। সেক্ষেত্রে হিলারির বিজয়ী হওয়ার ক্ষীণ সম্ভাবনা বেঁচে আছে। উইকিপিডিয়ার হিসাবে নির্বাচনে ট্রাম্প পেয়েছেন মোট ৩০৬টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট। হিলারি পেয়েছেন ২৩২টি।  ভোট পুনর্গণনায় যদি উইসকনসিন, মিশিগান ও পেনসিলভ্যানিয়াÑ এই তিনটি রাজ্যেই হিলারি বিজয়ী হন তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল পাল্টে যাবে। তিনি হতে পারেন প্রেসিডেন্ট। উইসকনসিনে রয়েছে ১০টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট। মিশিগানে ১৬টি ও পেনসিলভ্যানিয়াতে ২০টি। মোট ৪৬টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট। এগুলো হিলারির আয়ত্তে গেলে ট্রাম্পের ৩০৬টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট থেকে ৪৬টি বাদ গিয়ে তার মোট ভোট দাঁড়াবে ২৬০টি। অন্যদিকে হিলারির ২৩২টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের সঙ্গে ওই ৪৬টি যুক্ত হলে তার ভোট দাঁড়াবে ২৭৮টি। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হতে হলে একজন প্রার্থীকে কমপক্ষে ২৭০টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেতে হয়। ফলে এখনও সম্ভাবনা জিঁইয়ে আছে হিলারির।

পাঠকের মতামত: